নামে বাসর লতা হলেও সাধারণত যেসব ফুল বাসর সাজাতে ব্যবহার করা হয় তার তালিকায় নেই এর নাম। এটি দক্ষিণ ভারতের স্থানীয় গাছ। বাসার গেট, উঁচু দেয়াল বা মাচায় লতানো গাছে থোকা থোকা ঝুলন্ত বাসর লতার ফুল মৃদু বাতাসে দুলে বিনে পয়সায়ই তার অপার সৌন্দযর্ বিলায়। সমান্তরাল মাচায় বাসর সাজানোর ফুলের মতো চমৎকার নিখুঁত ভঙ্গিতে ঝুলে থাকে বলে সম্ভবত এদের নাম বাসর লতা, বাঁশলতা বা চোঙালতা। এই ফুলের পাপড়িগুলো পুরোপুরি খোলে না। ফুল দেখলে ছুঁতে ইচ্ছা করে কিন্তু গন্ধহীন।
বাসর লতা Acanthaceae পরিবারভুক্ত বৈজ্ঞানিক নাম Thunbergia mysorensis। বৈজ্ঞানিক নামের শেষাংশ ভারতের মহিসুরের স্মারণিক। এ কারণে ইংরেজিতে মায়সুর ক্লক ভাইন বা শুধু ক্লক ভাইন নামেও পরিচিত বাসর লতা। Mysore trumpet vine, Indian clock vine, brick & butter vine, lady’s slipper vine, dolls’ shoes নামগুলো উল্লেখযোগ্য।
দেখতে অনেকটা মাধবী লতার মতো শক্ত লতার গাছ বাসর লতা। সাধারণত গাছ প্রায় ২০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। পাতার বিন্যাস বিপ্রতীপ, লম্বাটে, গভীর শিরাযুক্ত। পাতার দৈঘর্ ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার। মাচা পেলে ফুল ফুটে ঝুলে থাকে। ঝুলন্ত মঞ্জরীতে তামাটে লাল ফুল থাকে প্রায় সারাবছর। পর্যায়ক্রমে ফোটে। ফুলের পাপড়িগুলো সম্পূর্ণ খুলে না। বতর্মানে আলঙ্কারিক গাছ হিসেবে পৃথিবীর সব উষ্ণমণ্ডলীয় দেশে স্থান করে নিয়েছে বাসর লতা।
বাসর লতা খুব একটা সহজলভ্য নয়। বাসর লতা দক্ষিণ ভারতের নীলগিরি পাহাড়ের কন্যাকুমারী অঞ্চলে অন্তত ৯০০ মিটার উচ্চতায় প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে। সাধারণত মিশনারীর মাধ্যমে সর্বত্র এই গাছ ছড়িয়ে পড়েছে।