জবা আমাদের অতি পরিচিত একটি ফুল। Malvaceae গোত্রের অন্তর্গত একটি চিরসবুজ পুষ্পধারী গুল্ম বা ঝোপ জতীয় গাছ। সাধারণত সাত আট ফুট উচ্চতায় হয় থাকে। এর উৎপত্তি পূর্ব এশিয়াতে। গাঢ় হলুদ রাঙা পঞ্চ পাপড়ির মাঝখানে টকটকে লাল রঙ ফুলটিকে করে তুলেছে আরো আকর্ষনীয়।
এর পাতাগুলি চকচকে ও করাতের মত খাজকাটা হয়।জবা ফুলের কয়েকশত প্রজাতির গাছ রয়েছে। এদের কয়েকটি পরিচিত বাংলা নাম হচ্ছে জবা, রক্তজবা, ঝুমকা জবা, জবা কুসুম, মরিচা জবা ইত্যাদি।
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : জবা কুসুম, জবাপুস্প,জপা, ত্রিসন্ধ্যা, অরুণা, সিতা।
Common Name : Chinese hibiscus, China rose, Hawaiian hibiscus, shoeblackplant ইত্যাদি
Scientific Name : Hibiscus rosa-sinensis.
জবা একটি চিরসবুজ গুল্ম যার উচ্চতা ২.৫-৫ মি(৮-১৬ ফিট) ও প্রস্থ ১.৫-৩ মি(৫-১০ ফিট)। এর পাতাগুলি চকচকে ও ফুলগুলি উজ্জ্বল লাল বর্ণের ও ৫টি পাপড়ি যুক্ত। ফুলগুলির ব্যাস ১০ সেমি(৪ ইঞ্চি) এবং গ্রীষ্মকাল ও শরতকালে ফোটে।
বাগানের গাছ হিসেবে জবাকে গ্রীষ্মমণ্ডল এবং উপগ্রীষ্মমণ্ডল অঞ্চলে সর্বত্র ব্যবহার করা হয়। যেহেতু জবা ১০°সেলসিয়াসের নীচের তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না, তাই নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে জবা গাছকে গ্রীনহাউসে রাখা হয়।
জবা গাছের বিভিন্ন রকমের সংকর প্রজাতি আছে, যাদের ফুলের রঙ সাদা, হলুদ,কমলা, ইত্যাদি হতে পারে।
জবা ফুল ঠোঙ্গা আকৃতি, পঞ্চমুখি ও থোকা আকারের হয়ে থাকে। এছাড়াও বাভিন্ন ধরনের জবা বিভিন্ন রকমের হয়। কিছু কিছূ জবা আছে যেগুলি সম্পূর্ন ভিন্ন রকমের হয়। যেমন ঝুমকা জবা ও মরিচা জবা সর্ম্পর্ণ ভিন্ন রকমের। জবা গাছের বিভিন্ন রকমের সংকর প্রজাতি আছে, যাদের ফুলের রঙ সাদা, হলুদ, কমলা, লাল, এমনকি মিশ্রও হতে দেখা যায়।
জবা গাছের ডাল বর্ষা কালে সেঁত স্যাঁতে মাটিতে রোপন করে সহজেই বংশবিস্তার করা সম্ভব। জবা গাছ আবাদী ও অনাবাদী বনজ সব ধরনের হয়ে থাক।
জবার উপকারিতাঃ
জবা ফুলে নানান ঔষধি গুনাগুণ রয়েছে। ফুল, পাপড়ি ও গাছের ছালও ঔষধি গুনসম্পন্ন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লাল জবা ফুল বা এর পাতাকেই ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন উপকারে। চোখ ওঠা রোগ দূর করতে, সর্দি ও কাশিতে, চুলের বৃদ্ধির জন্য, হাতের তালুতে চামড়া উঠা ইত্যাদি রোগের ঔষধি গুনাগুণ রয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় চুলের যত্নে। বাজারে পাওয়া যায় এমন অনেক প্রক্রিয়াজাত তেলে লাল জবা ব্যবহার করা হয় চুলকে ঝলমলে ও মজবুত করার জন্য।এটা মেহেদীর সাথেও বেটে ব্যবহার করতে পারবেন আবার বেটে তেলের সাথেও ব্যবহার করতে পারেন।
জবা ফুলে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস। আর জবা গাছের পাতা ব্যবহার করা হয় চুল কালো করার জন্য।
জবা ফুলের পেস্ট ত্বকের ফাঙ্গাস প্রতিরোধ করে।
কোলেস্টেরল কমানোর কাজে এটি দারুণ টোটকা। প্রাচীন আয়ুর্বেদে ভেষজ ওষুধ হিসেবে এর পরিচিতি রয়েছে। তাইতো জবা ফুল অনেকে চা হিসেবে পান করে থাকেন।